এক সময়ের সিনেমা হল এখন মসজিদ
আপলোড সময় :
২২-০৩-২০২৫ ১২:৫৪:২৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২২-০৩-২০২৫ ১২:৫৪:২৯ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি শহরের ‘মিতু’ সিনেমা হলটি এখন মসজিদ। যেখানে এক সময় প্রচারিত হতো পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি, সেখানে এখন প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা হয়। পাঁচ সময়ে ভেসে আসে পবিত্র আজানের ধ্বনি। মুসল্লিদের পদভারে মুখর থাকে মসজিদ প্রাঙ্গণ। চলতি রমজানে পড়া হচ্ছে খতমে তারাবির নামাজ। স্থানীয়রা মসজিদটির নাম দিয়েছেন, ‘খানকায়ে মুছলিহীন ঝালকাঠি’। লোকে চেনে ‘কায়েদ মহল’ নামে।
ঝালকাঠি শহরের প্রাণকেন্দ্র কালিবাড়ি রোডের আমতলা মোড়ের উত্তরপূর্ব পাশে অবস্থিত ছিল মিতু সিনেমা হল। সৈয়দ জিয়াউল হক আবু জাহিদ এটি করেছিলেন। শহরের আরও দুটি সিনেমা হল এর মধ্যে বন্ধ হলেও এটি চলছিল। শেষের দিকে কুরুচিপূর্ণ ছবিই বেশি দেখানো হতো। এসব পোস্টারে ছেয়ে যেত শহরের দেয়াল। এসব দেখে হতাশা প্রকাশ করছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম, ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদরাসা ও ইসলামি কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আযিযুর রহমান নেছারাবাদী (কায়েদ সাহেব) হুজুর। তিনি একদিন বললেন, ‘এই জায়গাটা এক সময়ে নামাজের স্থান হবে। এখান থেকে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মানুষকে নামাজে ডাকা হবে।’ দেড় যুগ পরে সেই কথা বাস্তবে রূপ নিয়েছে এখন।
২০১১ সালের পৌর নির্বাচনের সময় সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে যায়। মালিক জিয়াউল হক ২০১১ সালে হলটি বিক্রি করে দেন। পরে ক্রেতা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী মাহবুব হোসেন ওই ভবনটিকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং ব্যবসার কাজে ব্যবহার করেন।
কায়েদ সাহেব হুজুরের একমাত্র সাহেবজাদা আরিরুল মুছলিহি মাওলানা মুহা. খলিলুর রহমান নেছারাবাদী মাহবুব হোসেনের কাছ থেকে ভবনসহ জমিটি কেনেন। স্থাপনার অবকাঠামো পরিবর্তন করে সেখানে একটি খানকাহ স্থাপন করেন তিনি। যার নাম দেয়া হয় ‘কায়েদ মহল’। বর্তমানে এখানে জামায়াতের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, জিকির-আজকারের পাশাপাশি সাপ্তাহিক ও মাসিক তালিমি জলসা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নেছারাবাদের কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট শাহনেওয়াজ লাভু জানান, কায়েদ সাহেব হুজুর ছিলেন আধ্যাত্মিক ব্যক্তি। তিনি মাঝেমধ্যে আল্লাহ প্রদত্ত কারামতি দেখাতেন। একদিন ঝালকাঠি শহরে প্রবেশ করছিলেন। তখন মিতু সিনেমার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় অশ্লীল পোস্টার দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তখন আধ্যাত্মিক অবস্থায় বলছিলেন ‘একসময়ে এখানে নামাজ হবে’। দীর্ঘ বছর পরে হলেও আল্লাহর ওলির সেই কথাটি আল্লাহ কবুল করেছেন।
আদর্শ সমাজ বাস্তবায়ন পরিষদের মহাসচিব ডা. মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ খান বলেন, কায়েদ সাহেব হুজুরের আধ্যাত্মিকতা ছিল দল-মত, ধর্ম-বর্ণ সবার ঊর্ধ্বে। তার আধ্যাত্মিকতায় অন্য ধর্মের মানুষও তাকে শ্রদ্ধা করতো। তার জন্য সিনেমা হলটিতে এখন আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে, নামাজ আদায় হচ্ছে। যা তার একমাত্র ছেলে নেছারাবাদী হুজুরের দক্ষতায় সম্ভব হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স